কিশোরগঞ্জ (অষ্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত উপজেলা অষ্টগ্রামের কাস্তুল ইউনিয়নের বাহাদুপুর (সবুরের ভাঙ্গা) জলমহাল দখল নিয়ে বিএনপির দু-পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে দু’পক্ষের মধ্যে ৫ জন আহত হয়েছে বলে জানা যায়। ১৮ মে শনিবার বাহাদুরপুর আনন্দ বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কাস্তুল ইউনিয়নের জলমহাল (সবুরের ভাঙ্গা) দখল করতে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাইদ আহমেদের নির্দেশে উপজেলার পূর্বঅষ্টগ্রাম ইউনিয়ন ও সদর ইউনিয়নের শতাধিক নেতাকর্মীরা শনিবার সকালে বাহাদুরপুর আনন্দ বাজার পৌঁছালে বাহাদুরপুর ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মারুফুজ্জামান ভূইয়া ও ৪নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি সুমন ভূইয়াদের নেতৃত্বে বাহাদুরপুরের স্থানীয় লোকজন বাধা দিলে বাকবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
বাহাদুরপুর ও অষ্টগ্রাম সদরের স্থানীয় বিএনপির একাধিক ব্যাক্তি জানান, এই জলমহালটিতে বাহাদুরপুর জামে মসজিদ, স্থানীয় বাসিন্দা এবং কাস্তল ইউনিয়ন পরিষদের যায়গা রয়েছে। জলমহালটি অতিতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইজারা দেওয়া হতো এবং ইজারার টাকা বাহাদুরপুর জামে মসজিদ, স্থানীয় লোকজন (যাদের জমি রয়েছে) এবং ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ভাগ করা হতো।
পরবর্তীতে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের নেতারা এটা জোরপূর্বক ভোগ করত। আওয়ামী লীগের পতনের পর এটি দখল মুক্ত হলে বিএনপির সভাপতির মাধ্যমে এর লভ্যাংশ নেওয়ার জন্য ৩ টি ভাগে ভাগ করা হয়। পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়ন ৪ আনা, অষ্টগ্রাম সদর ৪ আনা, আর বাহাদুরপুরের পকৃত মালিকরা ৮ আনা। এভাবে এতদিন চলার পর উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাইদ আহমেদ পুরো জলমহাল দখল করার জন্য পূর্ব অষ্টগ্রাম ও অষ্টগ্রাম সদর থেকে তার লোকজনদের দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত করে এখানে পাঠানো হয়।
তারা বলেন, অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুল ভাইয়ের আদর্শে আমরা উজ্জীবিত। জাকির হোসেন মুকুলের রাজনৈতিক জীবন থেকে আমরা শিখেছি কিভাবে অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হয়। আমরা এখানে শুধু অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি মাত্র।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন মুকুল ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, আমি এর তিব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমাদের বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর হুশিয়ারি রয়েছে যে, দলের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ কোনো অপকর্ম করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জলমহাল দখলের কথা অস্বীকার করে ছাত্রদলের আহবায়ক জাবেদ মাহমুদ জানান, আমরা কিশোরগঞ্জ যাওয়ার পথে বাহাদুরপুরে কিছু ডাকাত আমাদেরকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা করে আমাদের আহত করে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ সাইদ আহমেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে কিছু জানেন না, তিনি শুনেছেন ছাত্রদলের আহবায়ক জাবেদকে কিছু ডাকাত কুপিয়ে আহত করেছেন। এর বেশি আমি কিছু বলতে পারব না।
এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমিন জানান, এই বিষয়ে জাবেদ মাহমুদকে হামলার অভিযোগে ১১ জনকে আসামি করে অষ্টগ্রাম থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যাহার নাম্বার ১০ তারিখ ১৯/০৫/২০২৫ইং আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করব।